News:

দিলালপুর আব্দুল করিম উচ্চ বিদ্যালয়টি যাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত তিনি হলেন অবিভক্ত বাংলার শিক্ষামন্ত্রী খান বাহাদুর আব্দুল করিম। তাঁর উত্তরসূরীদের পক্ষে খান বাহাদুর আব্দুল করিম সাহেবের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান জনাব মো. এনায়েত করিম সাহেব তিন একর চার শতাংশ (৩.০৪ একর) ভূমি বিদ‌্যালয়ের নামে দান করেন। আসুন খান বাহাদুর আব্দুল করিম সম্পর্কে জেনে নিই।

খান বাহাদুর আব্দুল করিম - ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর প্রখ‌্যাত আইনজীবী ও রাজনীতিক খান বাহাদুর আব্দুল করিম জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর  ‍পূর্বপুরুষ হযরত শাহ তাজ মোহাম্মদ ধর্ম প্রচারের উদ্দেেশ‌্যে বঙ্গ দেশে আসেন। তাঁর পিতা মৌলভী আহমদ ছিলেন একজন ডিপুটি ম‌্যাজিস্ট্রেট এবং তার মাতার নাম সৈয়দা সৈয়দুন্নেসা। তাঁর পৈত্রিক নিবাস বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের বাহেরনগর গ্রামে।

আব্দুল করিম পিতার কর্মস্থল বরিশাল, সুধারাম ও ফরিদপুরে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ঢাকা মাদ্রাসা থেকে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি এন্ট্রান্স এবং ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে ফাইন আর্টস (এফ.এ) পাস করেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইংরেজি সাহিত‌্যে বি.এ (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ‌্যালয় থেকে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। আব্দুল করিম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা জজকোর্টে আইনব‌্যবসায় শুরু করেন। ১৯০৩ সালে তিনি কুমিল্লা জজকোর্টে ‘পাবলিক প্রসিকিউটর’ পদে যোগ দেন। ১৯২২ থেকে ১৯২৭ খ্রি. পর্যন্ত তিনি ত্রিপুরা জেলা বোর্ডের চেয়ারম‌্যান ছিলেন। ১৯২৬ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতীয় আইনসভার কাউন্সিল অব স্টেটের সদস‌্য ছিলেন। কাউন্সিল অব স্টেটের সদস‌্য থাকাকালে তিনি ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে দু’বার ও ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ‍দু’বার দিল্লি ও সিমলা অধিবেশনে চেয়ারম‌্যানের প‌্যানেলে ( চেয়ারম‌্যানের অনুপস্থিতিতে) অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

 

ভারতীয় আইনসভার সদস‌্য থাকাকালে আব্দুল করিম ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে ফরিদপুরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।

 

আব্দুল করিম ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস‌্য নির্বাচিত হন। ১৯৪১ সালে শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রিপরিষদে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ৩ মার্চ বাহেরনগরে নিজ বাড়িতে খান বাহাদুর আব্দুল করিমের মৃত‌্যু হয়।

সূত্র - সুবর্ণ জয়ন্তী ২০১৭ এর স্মরণিকা ‘সুবর্ণ পালক’ ও বাংলাপিডিয়া।